কোকা-কোলাকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়ে ১ লাখ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি

কোকা-কোলাকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়ে ১ লাখ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি

কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে কোকা-কোলা বাংলাদেশ লিমিটেড এবং দ্য কোকা-কোলা কোম্পানিকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। রোববার (৭ জুলাই) আইনজীবী জায়েদ বিন নাসের ডাকযোগে এবং ই-মেইলের মাধ্যমে এই নোটিশটি পাঠান।

>>>Adsense কোর্স করে মাসে ৫০ হাজার আয়...

লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, গত ৯ জুন ২০২৪ ইং তারিখ প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের দ্বারা শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের বিষয়টিই স্পষ্ট হয়নি, পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে কোকা-কোলা। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে বাংলাদেশে প্রচলিত দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ধারা ২৯৫ক এবং সাইবার সিকিউরিটি আইন, ২০২৩ এর ধারা ২৮ ও ৩৫ এর অধীনে কোকা-কোলা কোম্পানি অপরাধ করেছে।

বিজ্ঞাপনের বিতর্কিত অংশ

৯ জুন ২০২৪ তারিখে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে এমন কিছু বিষয়বস্তু ছিল যা অনেকের ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিজ্ঞাপনটিতে বাংলাদেশের কিছু পবিত্র প্রতীক ও চিহ্ন ব্যবহার করা হয়েছে, যা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে। এছাড়া বিজ্ঞাপনটির ভাষা ও উপস্থাপনার ধরন অনেকের কাছে অমর্যাদাকর ও অবমাননাকর হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

লিগ্যাল নোটিশের মূল বক্তব্য

লিগ্যাল নোটিশে আইনজীবী জায়েদ বিন নাসের উল্লেখ করেছেন যে, কোকা-কোলা কোম্পানির এই বিজ্ঞাপনটি বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত প্রতীক ও চিহ্নগুলোর মাধ্যমে কোকা-কোলা কোম্পানি বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সহিষ্ণুতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এই অপরাধের জন্য কোম্পানির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছেন।

এখানে দেখুনঃ Adsense কোর্স করে মাসে ৫০ হাজার আয়...

আইনের ধারা

নোটিশে উল্লেখিত দণ্ডবিধির ধারা ২৯৫ক এবং সাইবার সিকিউরিটি আইন, ২০২৩ এর ধারা ২৮ ও ৩৫ এর অধীনে কোকা-কোলা কোম্পানি অপরাধ করেছে।

দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ধারা ২৯৫ক: এই ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো ধর্মের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ করেন, তাহলে তিনি অপরাধ করেছেন।

সাইবার সিকিউরিটি আইন, ২০২৩ এর ধারা ২৮: এই ধারা অনুযায়ী, কোনো অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কোনো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

ধারা ৩৫: এই ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে এমন কোনো কনটেন্ট প্রকাশ করে যা ধর্মীয় সহিংসতা সৃষ্টি করতে পারে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কোকা-কোলা কোম্পানির প্রতিক্রিয়া

এই লিগ্যাল নোটিশ সম্পর্কে কোকা-কোলা কোম্পানির পক্ষ থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এই ধরনের অভিযোগ কোম্পানির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। কোকা-কোলা কোম্পানি সাধারণত তাদের বিজ্ঞাপনে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংবেদনশীলতা বজায় রাখার বিষয়ে সচেতন থাকে, কিন্তু এই ঘটনায় তাদের এই প্রচেষ্টা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এখানে দেখুনঃ Adsense কোর্স করে মাসে ৫০ হাজার আয়...

সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া

এই বিজ্ঞাপন নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়াও মিশ্র। অনেকেই এই বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং কোকা-কোলা কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে, কিছু মানুষ মনে করছেন যে, এই ঘটনায় অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানো হচ্ছে এবং বিষয়টি আরও সংবেদনশীলভাবে মোকাবেলা করা উচিত।

সরকারের পদক্ষেপ

বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নিতে পারেন। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে সরকারি মহলে আলোচনা চলছে এবং কোকা-কোলা কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

লিগ্যাল নোটিশের পরবর্তী পদক্ষেপ

এই লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার পর কোকা-কোলা কোম্পানির করণীয় কী হবে তা নিয়ে অনেকেই কৌতূহলী। কোম্পানি যদি এই নোটিশের উত্তর না দেয় বা অভিযোগের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে এই ঘটনা কোর্টে গড়াতে পারে এবং কোম্পানির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

উপসংহার

বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং মানহানির অভিযোগে কোকা-কোলা কোম্পানিকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো একটি গুরুতর ঘটনা। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কোম্পানি কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এই ধরনের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে কোকা-কোলা কোম্পানি এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান তাদের বিজ্ঞাপন নীতি আরও সংবেদনশীলভাবে নির্ধারণ করবে বলে আশা করা যায়।

আশা করা যাচ্ছে যে, এই সমস্যার সমাধান দ্রুত হবে এবং সব পক্ষই এই পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নেবে। বিজ্ঞাপনগুলিতে সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় সংবেদনশীলতা বজায় রাখা সকলের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পুর্বের পোস্ট পরবর্তী পোস্ট